শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নরসিংদীর শিবপুরে পবিত্র আজিমুশ্বান ইসলামী জলসা অনুষ্ঠিত নরসিংদীতে তাওহীদ-ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে হেযবুত তাওহীদের মতবিনিময় সভা ঢাকা অঞ্চলের পিস অ্যাম্বাসেডর নেটওয়ার্ক (প্যান) গঠিত নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দক্ষতা ও উদ্ভাবন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত নরসিংদী নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত। নরসিংদীতে কৃষকলীগ নেতা গ্রেপ্তার আল্লাহর বিধানেই মানবতার মুক্তি’ নরসিংদী কর্মী সম্মেলনে হেযবুত তওহীদের ইমাম মাধবদীতে ইউপি চেয়ারম্যান মুফতি কাউছার কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন সভাপতি মাখন দাস রোটারী ক্লাব অব মাধবদীর প্রেসিডেন্ট ফজলুল হক ও সেক্রেটারী এমদাদুল হক নির্বাচিত

পাইকারচর ইউনিয়ন পরিষদে ইউডিসি মহসীন সহ তার ৩ ভাইয়ের দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম!

নিউজ ফাস্ট বিডি ডটকম / ৩৫২
প্রকাশকাল শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নরসিংদী সদর উপজেলার পাইকারচর ইউনিয়ন পরিষদের ইউডিসি মহসীন সহ তাদের তিন ভাইয়ের বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল হাসেমের প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে চাঁদাবাজির মাধ্যমে পাইকারচর ইউনিয়ন পরিষদকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে।
একসময় যারা তিনবেলা খাবার যোগাড় করতে হিমশিম খেতে হতো সেই পরিবারের সদস্যরা চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় থেকে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের পাশাপাশি কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
ইউনিয়ন পরিষদ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন একক সিন্ডিকেট।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাশেম চেয়ারম্যানের নিজ গ্রাম ( পাইকারচরের) সুরুজ মিয়ার ৩ ছেলে আঃ মতিন, রমজান মিয়া,এবং মহসিন চেয়ারম্যানের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে ক্রমান্বয়ে ইউনিয়ন পরিষদের ইউডিসি হওয়ার সুবাদে আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যায়। সেই থেকে তাদের আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
হাসেম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমে এ পরিবারের মতিনকে ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকিয়ে, তাঁর মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন বাবদ সর্বনিম্ন ৩ শত টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সাধারণ জনগণের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে আমাদেরকে জানিয়েছেন অত্র পরিষদেরই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মচারী।
এই কর্মচারী আমাদের আরো জানান,এই টাকার ৩ টা ভাগ হতো। এর এক ভাগ চেয়ারম্যান, এক ভাগ সচিব,আর এক ভাগ মতিন বন্টন করে নিতো।
ভাঙাচুড়া ঘর আর অভাবের সংসার থেকে বেরিয়ে এসে ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আঃমতিন সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন। এরই মধ্যে সে ইউনিয়ন পরিষদকে ব্যবহার করে অন্যত্র কাজ বাগিয়ে নিয়ে তার আরেক ভাই রমজানকে ইউনিয়ন পরিষদে বসিয়ে যান। ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকে রমজানও শুরু করে দেয় মতিনের মতোই সাধারণ জনগনের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ। এরই মধ্যে রমজান ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিদায় নিয়ে ছোট ভাই মহসিনকে দায়িত্ব দিয়ে পাড়ি জমান দক্ষিণ কোরিয়া। এদিকে টাকা আত্মসাৎকারী রমজান চেয়ারম্যানের প্রভাব খাঁটিয়ে নিজ বাড়ির পাশে রাস্তার উপর গড়ে তোলেন বিশাল টেক্সটাইল কারখানা।
৮ম শ্রেণী পাশ না করা মহসিন পরিষদে ঢুকে অবৈধ পন্থায় টাকা কামানো সহ ভূল আবেদনের মাধ্যমে শুরু করে গ্রাহক হয়রানি। এতদিনের টাকা কামানোর অনেকগুলো পদ্ধতির সাথে সংশোধনী আবেদন সহ আরো একটি বিষয় যোগ হয়। বিভিন্ন নিবন্ধনে বানান ভুল হলে,পরবর্তী সময়ে তা সঠিক করতে হলে নির্ধারিত ফি এর পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয় মহসীনকে।এ উসিলায় তার আয়ের পথ আরো সুগম হয়‌। এবিষয়ে তাকে বহুবার সতর্ক করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার পর বানান ভুল করলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে মহসিনকে রেখে দেয় চেয়ারম্যান।যা এখনও পর্যন্ত মহসিন অনবরত ভুল করেই আবেদন করে চলেছে বলে আমাদের জানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদে সংশোধন আবেদন করতে আসা একাধিক ভুক্তভোগী।
এদিকে ইউনিয়নের বাসিন্দা আমির হোসেন জানান, মেয়ের জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে আমাদের এখন আইডি কার্ড দেওয়া সত্ত্বেও সে ভূল করেছে। এখন বানান ঠিক করতে ৩০০ টাকা দাবি করে,অথচ এ বানাগুলো সে ইচ্ছে করে ভুল করেছে। তাছাড়া বাহির থেকে সঠিকভাবে আবেদন করলেও তারা তা মঞ্জুর করেনা।

সবুর উদ্দিন জানান, মহসিনের বড় ভাই মতিন আমার কাগজে ভুল করছে,বাবার নামে শুধুমাত্র ‘র’ টা ঠিক করবে এজন্য তাকে ৬০০ টাকা দিতে হয়েছে।তারা নিয়মের বেশি ফি আদায় করে আমাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করে আসছে।

এদিকে আশেপাশের কম্পিউটার কম্পোজ ব্যবসায়ীরা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের ইউডিসির একতরফা রাজত্বে আমরা কোনো আবেদন করতে পারিনা।
কোনো নাগরিক আমাদের কাছ থেকে শতভাগ সঠিক আবেদন করে নিলে সে আবেদন বাতিল করে দেয় ইউনিয়ন পরিষদের সচিব। মতিন বা মহসিন তারা কোনো সরকারি নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যাক্তি নয় তবুও তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়েছে শুধুমাত্র দুর্নীতির দালালির জন্য। তারা ইউনিয়ন পরিষদে দোকান দিয়েছে, যার ফলে আমাদের দোকান কম চলে।তারা চেয়ারম্যান কোটায় এ পরিবারের লোকগুলো একের পর এক ইউনিয়ন পরিষদের কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে।
বিষয়টি যাচাই করতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে,সম্পূর্ণ বিষয়টি স্বীকার করে ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সচিব ও মহসিন সামনে আর এমন ভুল হবেনা বলে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করে একটি খাম ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু প্রতিবেদক টিম অন ক্যামেরায় তার এ খাম ফেরত দিয়ে আসে।
এব্যাপারে বক্তব্যের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে পরপর ৩ দিন গিয়েও চেয়ারম্যানকে পাওয়া যায়নি।
ইউডিসি মহসীনের এসকল অন্যায়, দুর্নীতি, অনিয়ম ও চাঁদাবাজির কারণে দ্রুত তাকে ইউডিসির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর।


এই পাতার আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর