বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
নরসিংদীতে তাওহীদ-ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে হেযবুত তাওহীদের মতবিনিময় সভা ঢাকা অঞ্চলের পিস অ্যাম্বাসেডর নেটওয়ার্ক (প্যান) গঠিত নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দক্ষতা ও উদ্ভাবন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত নরসিংদী নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত। নরসিংদীতে কৃষকলীগ নেতা গ্রেপ্তার আল্লাহর বিধানেই মানবতার মুক্তি’ নরসিংদী কর্মী সম্মেলনে হেযবুত তওহীদের ইমাম মাধবদীতে ইউপি চেয়ারম্যান মুফতি কাউছার কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন সভাপতি মাখন দাস রোটারী ক্লাব অব মাধবদীর প্রেসিডেন্ট ফজলুল হক ও সেক্রেটারী এমদাদুল হক নির্বাচিত নরসিংদী জেলা সাংবাদিক সমিতি ঢাকা’র নব নির্বাচিত কমিটিকে সংবর্ধনা

নরসিংদী জেলা কারাগারে সরকার বিরোধী নাশকতাকারীদের ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট; ৪ জঙ্গি গ্রেফতার 

নিউজ ফাস্ট বিডি ডটকম / ২৪৭
প্রকাশকাল শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

নরসিংদী প্রতিনিধি: গত শুক্রবার (১৯ জুলাই ২০২৪ খ্রি.) ৭১ এর পরাজিত শক্তি ও বিপুল সংখ্যক দুস্কৃতিকারী ও নাশকতাকারীদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে জুম্মার নামাজ শেষে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারী ও বে-সরকারী স্থাপনায় ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ ও লুটের ঘটনা ঘটে। নরসিংদী পুলিশ সুপারের কার্যালয় এক সংবাদ সম্মেলনে এসপি মুস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি আরো জানান, এ সময় নাশকতাকারীরা নরসিংদীর বিভিন্ন থানায় আক্রমনের চেষ্টা করলেও পুলিশের প্রতিরোধের মুখে সফল হতে পারেনি। দুপুর আড়াইটার দিকে প্রায় ৮/১০ হাজার নাশকতাকারী নরসিংদী সদর থানার ভেলানগর মোড় ও উপজেলা পরিষদের মোড়ের দিকে অগ্রসর হয়ে দুই দিক থেকে আক্রমণের চেষ্টা চালায়। যেখানে এসপি অফিস, ডিসি অফিস এবং কোর্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারী স্থাপনা রয়েছে। এই সময় নাশকতাকারীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, দা, চাপাতি, ককটেল, ইট, পাথর, লোহার রড ও হাতুরিসহ অগ্রসর হতে দেখা যায়। জেলা পুলিশ, নরসিংদী ও নাশকতাকারীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং গোলাগুলি শুরু হয়। বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে নরসিংদী জেলা কারাগার নাশকতাকারীদের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। একই সময় নরসিংদী জেলার বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার নাশকতাকারীদের সাথে জেলা পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলি চলছিল। এ সময় জেলা পুলিশের এসিপিতে দূর থেকে গুলি লেগে ৩ টি স্থান বেদ করে। জেলা প্রশাসক সে সময় জেলা পুলিশের সাথে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছিলেন। বিকাল সাড়ে ৬ টার দিকে নরসিংদী পুলিশ সুপার ভিন্ন ধরণের গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে মোবাইল ফোনে নরসিংদী জেলা কারাগারের জেল সুপারের সাথে যোগাযোগ করে জিজ্ঞাসা করেন যে, “আপনার অস্ত্রাগার থেকে কি অস্ত্র লুট হয়েছে, জেল সুপার উত্তরে বলেন যে, ‘অস্ত্র লুট হতে পারে, আমি নাশকতাকারীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এখন আত্মগোপনে আছি’।

ইতোমধ্যে নাশকতাকারীরা নরসিংদী জেলা কারাগার হতে লুণ্ঠিত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জেলখানার মোড় হতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও কোর্ট প্রাঙ্গণের দিকে চতুর্দিক হতে গুলি করে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশ সুপার  ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে নরসিংদী সার্কিট হাউজের সামনে ডিউটিরত পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করে। নরসিংদী সার্কিট হাউজ হতে কোর্ট প্রাঙ্গণ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ডিউটিরত পুলিশ প্রায় সাড়ে  ৩ ঘন্টার ব্যপক গোলা-গুলির পর রাত প্রায় সাড়ে ১০ টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নরসিংদী জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল রাত পৌনে ১১ টায় জেলা কারাগারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। রাত  ১১ টায় ভারপ্রাপ্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও নরসিংদী পুলিশ সুপার নরসিংদী জেলা কারাগার পরিদর্শন করেন। রাত  ২ টার দিকে ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ, বিপিএম (বার) এবং নরসিংদী পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

নরসিংদী জেলা কারাগার হতে ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, আনুমানিক ৭০০০ রাউন্ড গুলি ও লুণ্ঠিত হয় এবং ৯জন জঙ্গীসহ সর্বমোট- ৮২৬ জন হাজতীরা পালিয়ে যায়।

এ পর্যন্ত জেলা পুলিশের ৪ জন গুরুত্বর আহতসহ সর্বমোট- ৩৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়।

১৮৪ জন নাশকতাকারী গ্রেফতারসহ ৪ জন জঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়।

নরসিংদী শিবপুরের কাজিরচর গ্রামের মো. আবুল ভূইয়ার ছেলে জুয়েল ভূইয়া(২৬) নরসিংদী জেলা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়।

নরসিংদী মাধবদী থানার নুরালাপুর গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে ফারুক আহম্মেদ র‍্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয়। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী থানার পশ্চিম বেলতৈল গ্রামের রাকিবুল হাসানের স্ত্রী খাদিজা পারভীন ওরফে মেঘলা সিটিটিসি কর্তৃক গ্রেফতার হয়। পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার বিলবিলাস গ্রামের হাবিবুর রহমানের কন্যা ইশরাত জাহান ওরফে মৌসুমী ওরফে মৌ সিটিটিসি কর্তৃক গ্রেফতার হয়। এ পর্যন্ত সর্বমোট  ১১টি মামলা রুজু করা হয়। ৪৮১ জন পলাতক হাজতি আত্মসমর্পন করেন। ৪জন পলাতক হাজতিকে গ্রেফতার করা হয়।

বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত নরসিংদী জেলা পুলিশ জেলা কারাগার হতে লুণ্ঠিত সর্বমোট-৪৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

এর মধ্যে চায়না রাইফেল ২০টি, BD 08 মডেল রাইফেল ১৫টি ও শর্টগান-১০টি।

সর্বমোট-১০৯১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

এর মধ্যে 7.62 X 39 চায়না গুলি- ১০৬০ রাউন্ড, শর্টগানের গুলি-৩১ রাউন্ড।

তাছাড়া ২২৭টি গুলির খোসা, ২০টি ম্যাগাজিন, ১০টি হাতকড়া উদ্ধার করা হয়েছে। এসপি মুস্তাফিজুর রহমান নরসিংদীবাসীর সহযোগিতায় নাশকতাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


এই পাতার আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর