শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নরসিংদীর শিবপুরে পবিত্র আজিমুশ্বান ইসলামী জলসা অনুষ্ঠিত নরসিংদীতে তাওহীদ-ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে হেযবুত তাওহীদের মতবিনিময় সভা ঢাকা অঞ্চলের পিস অ্যাম্বাসেডর নেটওয়ার্ক (প্যান) গঠিত নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দক্ষতা ও উদ্ভাবন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত নরসিংদী নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত। নরসিংদীতে কৃষকলীগ নেতা গ্রেপ্তার আল্লাহর বিধানেই মানবতার মুক্তি’ নরসিংদী কর্মী সম্মেলনে হেযবুত তওহীদের ইমাম মাধবদীতে ইউপি চেয়ারম্যান মুফতি কাউছার কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন সভাপতি মাখন দাস রোটারী ক্লাব অব মাধবদীর প্রেসিডেন্ট ফজলুল হক ও সেক্রেটারী এমদাদুল হক নির্বাচিত

আলোকবালিতে বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুগ্রুপে ব্যাপক সংঘর্স

নিউজ ফাস্ট বিডি ডটকম / ৩০৭
প্রকাশকাল বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪

সফিকুল ইসলাম রিপন ঃ নরসিংদী

বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করে নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিলা গ্রামে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলি ও টেটাবিদ্ধ হয়ে উভয়পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে টেটাবিদ্ধ কুতুব উদ্দিন (৩৫) সহ তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ইছাগুরি গোষ্ঠি ও আজ্জাইর গোষ্ঠির লোকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের লোকেরা আগ্নেয়াস্ত্র, টেটা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন খোদাদিলা গ্রামের টেটাবিদ্ধ মৃত সাত্তার মিয়ার ছেলে কুতুব উদ্দিন (৩৫), গুলিবিদ্ধ হক মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ (১৬), ককটেল বিস্ফোরণে ফিরোজ মিয়ার ছেলে তৈয়ব (১৫), মৃত কামাল মিয়ার ছেলে রমজান (২৫), জামাল মিয়ার ছেলে মামুন (২৮), সাফি আয়সের ছেলে রাসেল (২২), গনি মিয়ার ছেলে কাজল (৩৩), সেলিম মিয়ার ছেলে ঈমন (২২), সবিকুল হোসেনের ছেলে

শান্ত (২৪), জাকারিয়ার ছেলে আলতা (২২), রাজ্জাক মিয়ার ছেলে হৃদয় (১৮) ও মালা মিয়ার ছেলে নাসির (২৩)। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মেঘনা নদী ও তার শাখা নদীর নাব্যতা বৃদ্ধিতে নদী থেকে বালু উত্তোলন কার্যক্রম গত দুই মাস আগে শুরু হয়। প্রকল্প অনুযায়ী এসব বালু নদীর পাশে রাখার কথা হলেও প্রভাব বিস্তার করে আলোকবালী ইউনিয়নের সাতপড়া ও খোদাদিলা,বাখরনগর সহ বিভিন্ন গ্রামের ফসলী জমি, পুকুর, ডোবাসহ বিভিন্ন স্থান ভরাট করা হচ্ছে। আর এসব স্থানগুলো বালু ভরাটের জন্য প্রতি শতাংশের জন্য ১০-১৫ হাজার টাকা করে নেয়।খোদাদিলা ও এক ই রকম ভাবে আজ্জাইর গোষ্ঠির জয়নাল আবেদিন সরকার , ফাহিম ছিদ্দিকী তার গোষ্ঠির লোকজন ১০-১৫ হাজার টাকা করে নেয়।

অবৈধ এই বালু ব্যবসায় আজ্জাইর গোষ্ঠির ১০ জন শেয়ার থাকলেও ইছাগুরি গোষ্ঠির জাকির গং দের কোন লোককে রাখা হয়নি। গত ২৮ এপ্রিল ইছাগুরি গোষ্ঠির আমানুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি অবৈধ এই বালু ব্যবসার ভাগ চাইতে গেলে তাকে সেই বালু ব্যবসার ভাগ না দিয়ে উল্টো চর থাপ্পড় মেরে গ্রাম থেকে বের করে দেয়। এতেও তারা ক্ষান্ত হয়নি। আমানুল্লাহ যদি দল পাকায় এই ভয়ে পরের দিন ২৯ এপ্রিল আজ্জাইর গোষ্ঠির লোকজন ইছাগুরির গোষ্ঠির লোকজনদের গ্রাম ছাড়া করেন।

সেই থেকেই এলাকায় কানাঘুষা চলতে থাকে এই বুঝি ইছাগুরি গোষ্ঠি লোকেরা চলে আসলো। এভাবেই চলছে কয়েকদিন ধরে।

এদিকে ইছাগুরি গোষ্ঠির লোকেরা বাইরে থেকে সংঘবদ্ধ হতে থাকে এবং এলাকায় ঢুকার সুযোগ খুজতে থাকে। লোকমুখে শোনা যায় এলাকার বাইরে থাকা ইছাগুরি গোষ্ঠির অর্থ ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা ও সাহস জুগিয়েছেন স্পেন প্রবাসী আল আমিন মিয়া। এলাকায় ঢুকার সুযোগের অপেক্ষায় থাকা ইছাগুরি গোষ্ঠির লোকেরা আজ সেই মোক্ষম সময় পেয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন নিয়ে জাকিরের নেতৃত্বে আগ্নেয় অস্ত্র টেটা ও ও দাঁ ছুরি নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করে। এলাকায় প্রবেশের সময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে। ককটেল বিস্ফোরণে শব্দে প্রতিপক্ষ আজ্জাইর গোষ্ঠি লোকরা ঘুম থেকে জেগে বাড়ীর বাইরে বের হয়ে এলে তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও টেটা নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে গুলি ও টেটাবিদ্ধ হয়ে উভয় পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের কয়েকজনকে নরসিংদী ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ।অন্যদেরকে গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহতদের মধ্যে তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আবারও হামলার শিকার হতে পারে এই ভেবে আজ্জাইর গোষ্ঠির লোকজন বর্তমানে গ্রাম ছাড়া হয়। সকাল থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এ ব্যাপারে আলোক বালি ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিপু বলেন, এলাকায় মারামারি হয়েছে বিষয়টা শুনেছি। ভোর রাতে জাকির গ্রুপ ও জয়নাল গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে সেটাও শুনেছি।

নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই দুটি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘ দিনের বিরোধ রয়েছে। জাকির গ্রুপ এলাকায় প্রবেশ করতে চাইলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়। খোদাদিলা গ্রামটি অনেক বড়। এক দিকে ধাওয়া করলে অন্য দিক দিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ভোর থেকে আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।


এই পাতার আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর