শিবপুরে প্রতিপক্ষের দেয়া আগুনে পুড়ল কোটি টাকার ফল

বাড়ির সীমানা প্রাচীর সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নরসিংদী শিবপুরের পুটিয়ায় ফলের দোকানে প্রতিপক্ষের দেয়া আগুনে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় পাশে থাকা রিক্সার গ্যারেজ ও ফিস ফিডের দোকানও পুড়ে যায়। এই ঘটনায় অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, শিবপুরে পুটিয়া ইউনিয়নের ত্রিমোহনী এলাকার মামুন খন্দকার (৩৫) এর সাথে প্রতিবেশী মান্নান (৪৩) ও সুমনের সাথে বাড়ির সীমানা প্রাচীর নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ চলছে। এ নিয়ে গত বুধবার বিকালে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ওই ঘটনায়, আহতরা হলেন, মামুন খন্দকার (৩৫), রাবেয়া আক্তার (৩৫), কহিনুর (৪৫), ডলি আক্তার (৫০) ও সাদ্দাম হোসেন (৩০)।
পরে, শিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মামুন। অপর দিকে সুমনও মামুনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
পরের দিন বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩০ টার দিকে শিবপুর মডেল থানার এসআই কামালের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় দফায় মহিলা সহ আরও ৪ জনকে পিটানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিন দিবাগত রাত ৩ টার দিকে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে একটি ফলের দোকান এবং ১ টি রিক্সার গ্যারেজের প্রায় ১০-১২ টি রিক্সার পুড়ে যায়। তাছাড়াও রিক্সার গ্যারেজের পাশে থাকা আবু তাহের খন্দকার এর ফিস ফিড দোকানের একটা অংশ পুড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে রাত ৪টার দিকে শিবপুর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় রিক্সার গ্যারেজের প্রায় ৮ লাখ টাকা ও ফিস ফিডের দোকানে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।
ভুক্তভোগী মামুন বলেন, “বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজা নাজমুল দোকানে রাতে অবস্থান করছিলো। রাত ৩ টার দিকে আমার প্রতিপক্ষ সুমন ও মান্নানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে আমার প্রায় কোটির টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সামনে রমজান মাস উপলক্ষে আমার দোকানে প্রায় এক কোটি টাকার বেশি খেজুর, আপেল, কমলালেবু সহ বিভিন্ন ধরনের ফল স্টক করেছিলাম। আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
পুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার হাসানুল হক এলিছ বলেন, ” মামুনের সাথে প্রতিবেশী সুমন ও মান্নানের দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। মামুন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শুনেছি কিন্তু তাদের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি। রাতে আগুন দেয়ার ঘটনায় মামুনের পাশে থাকা আমারও ব্যবসায়িক দোকানও পুড়ে গেছে। এতে ৫-৬ লক্ষ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। আমি চাই প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় যেন নিয়ে আসেন।”
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, “বাড়ির প্রাচীর সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পুটিয়ার মামুন খন্দকার ও সুমনের ঝামেল চলছিলো। আমি গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। ফলের দোকানে আগুন দিয়েছেন কিনা জানি না, খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
এস আই কামালের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ” এ ধরনের ঘটনা ঘটার কথা শুনি নি। লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”