বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
নরসিংদীতে তাওহীদ-ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে হেযবুত তাওহীদের মতবিনিময় সভা ঢাকা অঞ্চলের পিস অ্যাম্বাসেডর নেটওয়ার্ক (প্যান) গঠিত নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দক্ষতা ও উদ্ভাবন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত নরসিংদী নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত। নরসিংদীতে কৃষকলীগ নেতা গ্রেপ্তার আল্লাহর বিধানেই মানবতার মুক্তি’ নরসিংদী কর্মী সম্মেলনে হেযবুত তওহীদের ইমাম মাধবদীতে ইউপি চেয়ারম্যান মুফতি কাউছার কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন সভাপতি মাখন দাস রোটারী ক্লাব অব মাধবদীর প্রেসিডেন্ট ফজলুল হক ও সেক্রেটারী এমদাদুল হক নির্বাচিত নরসিংদী জেলা সাংবাদিক সমিতি ঢাকা’র নব নির্বাচিত কমিটিকে সংবর্ধনা

নরসিংদীর সাগর কলার চাহিদা বাড়লেও চাষ কমছে

নিউজ ফাস্ট বিডি ডটকম / ২৭০
প্রকাশকাল শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদীর ঐতিহ্যবাহী সাগর কলার চাহিদা থাকা সত্ত্বেও উৎপাদন কমে যাচ্ছে। মাটির উর্বরতা হারানো, সারের দাম বৃদ্ধি ও শ্রমিক সংকটের কারণে কলা চাষ ব্যাহত হচ্ছে। জনপ্রিয় অমৃত সাগর কলা এখনো বাজারে চাহিদাসম্পন্ন, তবে চাষিরা এ কলা আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন। কৃষিবিদরা মনে করেন, কৃষি সহায়তা ও প্রযুক্তিগত সমর্থন বাড়ালে ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব।

নরসিংদী সদর, পলাশ, রায়পুরা, ঘোড়াশাল, শিবপুর, শিলমান্দি ও মনোহরদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাগর কলার চাষ হয়। এ কলাটি মাঝারি আকারের এবং হলুদ রঙের। তার স্বাদ ও ঘ্রাণ অন্য যেকোনো কলার চেয়ে আলাদা। বিশেষত নরসিংদীর মাটিতেই এর চাষ সবচেয়ে ভালো হয়। এতে একটি মিষ্টি গন্ধও থাকে, যা পাকলে বাগানটিকে এক অনন্য সৌরভে ভরিয়ে তোলে। তবে বর্তমানে সাগর কলার উৎপাদন আগের তুলনায় কমে যাচ্ছে। চাহিদা থাকলেও উৎপাদন নেই তেমন।

স্থানীয় কলাচাষিরা জানান, সাগর কলার সবচেয়ে ভালো ফলন হয় নরসিংদী সদরের ৫০ শতাংশ জমিতে। তবে পলাশ উপজেলায় এ কলার চাষের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে ভালো। পলাশের চরনগদী বাজারে কলা বিক্রির জন্য প্রতিদিন ভিড় করেন কলা বিক্রেতারা। এই বাজারে কাঁচা কলা প্রতি পিস ৮ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর পাকা কলা প্রতি পিস ১৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। এর পাশাপাশি শীতকালেও কলার চাহিদা রয়েছে; তবে গরমকালে এই চাহিদা আরও বাড়ে।

বিশ্ববাজারেও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা এখন জিআই পণ্য হিসেবে পরিচিত। তবে কলা চাষের ঐতিহ্য ধরে রাখার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয় কৃষকরা দাবি করেন। কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অন্যান্য ফসলের দিকে গুরুত্ব দিলেও কলা চাষের প্রতি তেমন মনোযোগী হন না, যে কারণে কলাচাষিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা আরও জানান, সারের দাম বৃদ্ধি এবং শ্রমিক সংকটের কারণে কলা চাষে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। অনেক কৃষক কলার আবাদ ছেড়ে দিয়ে এখন কলা কিনে বিক্রি করছেন এবং অন্য কোনো পেশায় ঝুঁকছেন।

রায়পুরার জঙ্গলী শিবপুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় কৃষকরা ঐতিহ্যবাহী সাগর কলা বিক্রি করছেন। এখানে কলার ব্যাপারী কাজল মিয়া জানান, তিনি ৪০ বছর ধরে কলার ব্যবসা করছেন এবং তার মতে, নরসিংদীর সাগর কলার মতো দেশে অন্য কোনো কলা নেই। তিনি আরও বলেন, ‘সাগর কলা পাকার আগেই তা কেটে নিতে হয়। কারণ রৌদ্রের তাপমাত্রা বেশি হলে কলা দ্রুত পেকে যায় এবং কৃষকরা তখন তা বাজারে নিয়ে আসতে পারেন না।’

কলা চাষে সংশ্লিষ্টরা জানান, কলা চাষের জন্য সরকারি সহায়তা বৃদ্ধি, কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে এই ঐতিহ্য রক্ষা করা সম্ভব হতে পারে। না হলে এক সময়ের এই বিখ্যাত কলার চাষ হয়তো একদিন হারিয়ে যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আজিজুর রহমান বলেন, ‘নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা সারা দেশে সুপরিচিত। এ জেলার প্রায় ২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয়। এর মধ্যে ৫৮৩ হেক্টর জমিতে অমৃত সাগর কলার চাষ হয়। তবে এ কলা অন্যান্য কলার তুলনায় দ্রুত পেকে যায়। ফলে তার সংরক্ষণ ক্ষমতা কম থাকে এবং কৃষকরা বাজারজাত করার সুযোগ পান না। ফলে কৃষকরা এ আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছে।’

নরসিংদীর মাটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও উপযোগী আবহাওয়া, যা অন্যান্য স্থানে পাওয়া যায় না। এখানকার অম্লীয় লাল মাটি এই কলা চাষের জন্য আদর্শ। তবে এই ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য কৃষি সহায়তা বৃদ্ধি করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও তৎপরতা প্রয়োজন বলে মনে করেন কৃষিবিদরা।
#


এই পাতার আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর