নরসিংদীতে সরকারী বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে প্রভাবশালী মহলের দোকানপাট নির্মাণ!

সফিকুল ইসলাম রিপন ঃ নরসিংদী
নরসিংদীতে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করে বাজার করার অভিযাগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। প্রায় ৮বছর পূর্বে এই মাঠটি দখল করে বাজারটি চালু করা হয় বলে জানান এলাকাবাসী। বিদ্যালয়ের মাঠ উদ্ধারে বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করলেও কোন প্রতিকার হয়নি । ফলে বিদ্যালয় পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করার দাবী তাদের।
নরসিংদী সদর উপজলার করিমপুর ইউনিয়নের রসুলপুরে বিগত ১৯১৯ সালে রসুলপুর ফ্রি-প্রাইমারি স্কুলের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৬৯ সালে আরএস জরিপকালে ১ শত শতাংশ জমি রসুলপুর ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। ১৯৭৩ সালে ৩০ নং রসুলপুর ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে জাতীয়করণ করা হয়। পরবর্তিতে ১৯৯৩ সালে এই জমিটি রসুলপুর ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। এরই মধ্যে বিগত ৮বছর পূর্বে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাবসায়ী মমিন মিয়ার কু-নজরে পড়ে। তিনি ওই জমিতে বালু ভরাট করে তার বড় ভাই দুলাল মিয়ার নামে বাজার চালু করেন। এতে করে এক শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের মাঠটি প্রভাবশালী মহলের দখলে চলে যায়। সেই সাথে বন্ধ হয়ে যায় ওই এলাকাসহ পাশ্ববর্তী ৭/৮ গ্রামের মানুষের প্রধান খেলাধুলার মাঠ । স্থানীয় একটি পক্ষ বাজারের বিষয়ে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে জায়গাটি বিদ্যালয়ের ছিল বলে স্বীকার করলেও জমি ছাড়তে অস্বীকৃতি জানায় তারা। এদিকে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি যেকোন উপায়ে দখলমুক্ত চান এলাকাবাসী।
অভিযুক্ত মো. মমিন মিয়া বলেন, বহু বছর আগেই বিদ্যালয়ের মাঠটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কয়েক বছর আগে নদীতে চর জাগলে এর কিছু জমি পুনরুদ্ধার হয়। পরে এলাকাবাসীর অনুরোধে আমি বহু টাকা ব্যায় করে মাটি ভরাট করে দিলে তারা সেখানে দোকানপাট নির্মাণ করে। সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চু মাস্টার বলেন বাজারের জমিটি স্কুলের এতে কোন সন্দেহ নেই। বাচ্চাদের খেলার মাঠ তাদের মাঝে ফিরিয়ে দেয়া হউক।
এই বিষয়ে স্কুলের সভাপতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মমিনুর রহমান আপেল জানান স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টাসহ প্রশাসনের মাধ্যমে সমাধান চেয়েও সমাধান মেলেনি।
এটি সরকারি স্কুলের মাঠ হয়ে থাকলে সেই সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করে ছেলে মেয়েদের খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম।
এ নিয়ে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকার সচেতন মহল। তাই যে কোন ধরনের সহিংসতা রোধে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রভাবশালী মহলের হাত থেকে বিদ্যালয়ের মাঠটি উদ্ধার করে ছেলে মেয়েদের খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত করবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।